রহমত নিউজ 29 August, 2024 05:38 PM
ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। দেশের ১১ জেলায় ভয়াবহ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫৬ লাখেরও বেশি মানুষ। বন্যাকবলিত সেসব এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন করে দীর্ঘমেয়াদি ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।
গত বৃহস্পতিবার ( ২২ আগস্ট) সহযোগী সংগঠনগুলোর সাথে যৌথ সমন্বয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-প্রশিক্ষণ ও যুব মজলিসের মাইতুল মাল সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম এবং যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা বিভাগের সম্পাদক মাওলানা রাকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে ফেনী শহরের আলিম উদ্দিন রোড সালাউদ্দিন চত্বর সংলগ্ন রাবেয়া লতিফ মার্কেটে ক্যাম্প স্থাপন করে। কার্যক্রম শুরু বন্যার্ত মানুষের মধ্যে রান্নাকৃত খাবার বিতরণের মাধ্যমে। এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকায় ফুড প্যাকেজ, শিশু খাদ্য, প্রাথমিক ঔষধ, বিশুদ্ধ পানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্য বিতরণ করা হয়।
ক্যাম্পে দায়িত্বরত সংগঠনের সহ-বায়তুল মাল সম্পাদক ও যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সংগঠন বিভাগের সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, আমরা ক্যাম্পি স্থাপনপূর্বক কাজ করে যাচ্ছি। ফেনীতে এসেই আমরা এলাকা পরিদর্শন করে নির্ধারণ করেছি, বন্যার্ত মানুষের সবচেয়ে জরুরি কোন জিনিস। এলাকা পরিদর্শন করে আমরা অনুধাবন করি, পানিতে বাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় মানুষ চুলা জ্বালতে পারছে না। রান্নাকৃত খাবার জুটছে না কারো। তাই ফেনী শহরের সালাহউদ্দিন চত্বর সংলগ্ন রাবেয়া লতিফ মার্কেটে ক্যাম্প স্থাপন করে এখানে প্রতিদিন ত্রিশ থেকে চল্লিশ পাতিল খাবার রান্না করে বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করে যাচ্ছি। দিনভর কাজ করে যাচ্ছেন সারাদেশ থেকে আসা আমাদের শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী। তারা স্থানীয় শাখা ও মসজিদের ইমামদের সাথে সমন্বয় করে বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন।
সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক ত্রাণ কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ও পরিকল্পনা উল্লেখ করে বলেন, ভয়াবহ বন্যা শুরু হয়ে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হওয়ার পরপরই আমরা ত্রাণ প্রকল্প হাতে নেই। আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সারাদেশ থেকে জনসাধারণ বিভিন্ন সহযোগিতা পাঠাতে থাকেন।সাধারণ মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণে গত বৃহস্পতিবার থেকে আমাদের ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এই একসপ্তাহে ৩০৭৫০ জনের মধ্যে রান্নাকৃত খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ মেডিক্যাল ক্যাম্প কার্যক্রমের আওতায় সহস্রাধিক পরিবারকে সেবা প্রদান করা হয়েছে। প্রায় আড়াই হাজার পরিবারের মধ্যে ভারি খাবার বিতরণ করা হয়েছে। শিশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে ৪৫০ পরিবারে। মোমবাতি, গ্যাস লাইটার, কয়েল বিতরণ করা হয়েছে সহস্রাধিক পরিবারে। ৪৫ টি স্পটে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আমাদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এই কাজ করার সুযোগ হয়েছে জনসাধারণের ব্যাপক অংশগ্রহণের ফলে। এই জাতীয় দুর্যোগের সময়ে নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে এগিয়ে আসায় দেশের সকল নাগরিকের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
পরবর্তী পরিকল্পনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা পানি কমে যাওয়ার পর পুনঃর্বাসন কার্যক্রমের প্রকল্প হাতে নিয়েছি। গৃহ সামগ্রী, ঘর মেরামত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, চিকিৎসা ও কৃষি এই পাঁচটি খাতে আমরা ত্রাণ সহায়তা প্রদান করব। গৃহ সামগ্রী ক্রয়ের জন্য প্রতি পরিবারকে তিন হাজার, ঘর মেরামতের জন্য ত্রিশ হাজার, শিক্ষা সামগ্রীর জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানপ্রতি দশ হাজার, চিকিৎসা ও কৃষি খাতে পাঁচ হাজার করে প্রদানের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। দেশবাসীর আন্তরিক সহযোগিতা ও আল্লাহর রহমতে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে ইনশাআল্লাহ।